ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী মাদারীপুর জেলার দত্তপাড়া গ্রামের এক স্বনামধন্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা লাভের পর ড. চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি প্রানিবিদ্যা বিষয়ে বিএসসি(অনার্স) এবং কীটতত্ত্ব বিষয়ে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে তার এমএসসি এর গবেষণার কাজ পরিচালনা করেন। এমএসসি সম্পন্ন করার পর , ড. চৌধুরী বাংলাদেশ পারমানবিক শক্তি কমিশনে বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে, তিনি অস্ট্রিয়ার Seilbersdorf ল্যাবে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি(IAEA) এর ফেলো হিসেবে কাজ করেন এবং এছাড়াও Tifton, Ga, USDA-তে Insect Biology and Population Management Lab, USDA তে কাজ করেন। এরপর তিনি জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কীটতত্ত্বে তার পিএইচডি সম্পন্ন করেন। তার পিএইচডি পাওয়ার পর, ড. চৌধুরী কানসাস স্টেট ইউনিভার্সিটিতে সাউথওয়েস্ট রিসার্চ এক্সটেনশন সেন্টার,গার্ডেন সিটি, কেএস এর পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট হিসেবে যোগদান করেন।
১৯৮৯ সালে, ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বাংলাদেশে ফিরে আসেন এবং একটি কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত ব্যবসায়িক ফার্ম – SAFEWAY শুরু করেন। SAFEWAY হল একটি গবেষণা ও উন্নয়ন ভিত্তিক বেসরকারী খাতের ফার্ম যার উদ্দেশ্য পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতিতে জনসাধারনের এবং শহুরে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ করা। এ ক্ষেত্রে তার দুই দশকের দীর্ঘ কর্মযজ্ঞের কারনে অনেক তরুণ-তরণী এ সেক্টরে যোগ দেন। এখন এ খাতে শতাধিক পেস্ট কন্ট্রোল ফার্ম কাজ করছে। SAFEWAY তে কাজ করার সময়, তিনি ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়, লুইসিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটি , নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটি , সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (CDC), আটলান্টা, গাঁ এর মতো অনেক মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের সাথে গবেষণার কাজেও সহযোগিতা করেছেন। তিনি বাংলাদেশেও ICDDR,B ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথভাবে বৈজ্ঞানিক কাজে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি ২০জনের বেশি এমএসসি ছাত্র/ছাত্রী এবং একজন পিএইচডি ছাত্রের সহ-তত্ত্বাবধায়ক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ড. চৌধুরী তার ক্ষেত্রের নামীদামী জার্নালে বেশ কিছু গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনারে জনস্বাস্থ্যের কীটপতঙ্গ ব্যবস্থাপনার উপর অসংখ্য উপস্থাপনা করেছেন।
ড. চৌধুরী বেশ কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি বাংলাদেশ জুলজিক্যাল সোসাইটি(জেডএসবি) এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি জেডএসবির সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জেডএসবি বাংলাদেশের প্রাচীনতম বৈজ্ঞানিক সংস্থাগুলির মধ্যে একটি। বর্তমানে তিনি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে জড়িত। সময়ে সময়ে তিনি সামাজিক ও পরিবেশগত বিষয়ে স্থানীয় সংবাদপত্রে কলাম লেখেন। এছাড়াও তিনি চ্যানেল আই এর তৃতীয় মাত্রা সহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের টকশোতে অংশগ্রহণ করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে মাকসুদা চৌধুরী তার স্ত্রী।