জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন নদীর অবৈধ দখল, নদীর দূষণ, পানি ও পরিবেশ দূষণ, শিল্প কারখানা কর্তৃক সৃষ্ট নদী- দূষণ, অবৈধ কাঠামো নির্মাণ ও নানাবিধ অনিয়ম রোধকল্পে এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ পুনরম্নদ্ধার, নদীর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও নৌ-পরিবহন যোগ্য হিসাবে গড়ে তোলাসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রয়োজনে গঠন করা হয়েছে। জাতীয় নদী রড়্গা কমিশন আইন ২০১৩ এর ১২ ধারার মোট ১৩টি (ক হতে ড পর্যন্ত) কার্যাবলী কমিশনের উপর অর্পণ করা হয়েছে। তার মধ্যে নদীর অবৈধ দখলমুক্ত রাখা, বিলুপ্ত বা মৃত প্রায় নদী খনন, নদী সংক্রানত্ম তথ্য ভান্ডার উন্নয়নকরণ, নদীর পরিবেশগত ভারসাম্য ও টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ, বিভিন্ন মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, নিয়মিত নদী পরির্দশন এবং নদী সংক্রান্ত পরিবীক্ষণ, নদী সংশ্লিষ্ট বিদ্যমান আইন ও নীতিমালার ব্যবহারিক প্রয়োগ পর্যালোচনাক্রমে প্রয়োজনে সংশোধনের ও দেশের খাল, জলাশয়, সমুদ্র উপকূল দখল ও দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে সরকারের নিকট সুপারিশ প্রদানের লক্ষ্যে কমিশনকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। নদী সংশিস্নষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ, দপ্তর সমূহ নিজস্ব কাঠামোর মধ্যে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে থাকে। এ সকল প্রতিষ্ঠান স্ব স্ব আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। ফলে প্রায়শ: ঐ সকল প্রতিষ্ঠানের কার্যাবলরি মধ্যে সমন্বয়ের অভাব পরিলক্ষিত হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করে কিভাবে নদী রক্ষায় অভিন্ন লক্ষ্যে তাদেরকে পরিচালনা করা যায় সে বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করাই কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন 2013 এর 12 (ট) অনুযায়ী নিয়মিত পরিদর্শন এবং নদী সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিবীক্ষণ ক্রমে সুপারিশ করা জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের অন্যতম দায়িত্ব। নদী পরিদর্শন এর মূল উদ্দেশ্যসমূহ নিম্নরুপ :-
- নদী সমূহ সরেজমিন পরিদর্শনপূর্বক নদী সমূহের বর্তমান অবস্থা নিরুপন।
- নদীর দখল ও দূষণ ও নাব্যতা সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ।
- সমস্যা চিহ্নিতকরণ পূর্বক করনীয় নির্ধারণ।
- সরকারের নিকট প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদান।
উল্লেখিত উদ্দেশ্যসমূহ বিবেচনায় ও মহামান্য হাইকোর্টের রীটি পিটিশন নং-3509 এর বর্ণিত নির্দেমনা অনুযায়ী ঢাকার চারপার্শের সমূহের পুণরুদ্ধারকল্পে নদীর জরীপ, সীমানা পিলার চিহ্নিতকরণ ও স্থাপন, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ পুনরুদ্ধার, নদীর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে ঢাকার চারপার্শের নদী সমূহকে অগ্রাধিকার দিয়ে নিম্নবর্ণিত মোট 17 (সতের) টি নদী পরিদর্শন করা হয়।
বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা , ধলেশ্বরী, আদি বুড়িগঙ্গা, টঙ্গী খাল, ব্রহ্মপুত্র, চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, খুলনার ভৌরব, রাজশাহী, পাবনা, নাটোর, সিরাজগঞ্জের বড়াল।
|
প্রতিবেদনাধীন বছরে জাতীয় নদী রড়্গা কমিশনের চেয়ারম্যান এককভাবে ২ (দুই) টি এবং সার্বক্ষণিক সদস্য এককভাবে ১০ (দশ) টি পরিদর্শন করেছেন। উভয়ে যৌথভাবে ৫ (পাঁচ) টি পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে নদী সমূহের দখল, দূষণ প্রতিরোধ, নদীর নাব্যতা রড়্গা ও পুণরুদ্ধার এবং আর্থ সামাজিক উন্নয়নে নদীর বহুমাত্রিক ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে সর্বমোট ১৫২ টি সুপারিশ করা হয় এবং বাসত্মবায়নের জন্য সংশিস্নষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থায় পরিদর্শন প্রতিবেদন প্রেরণ করা হয়।
পরিদর্শনে বর্ণিত সুপারিশ সমূহ বাসত্মবায়নের বিষয়ে সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর সংস্থা হতে প্রাথমিক তথ্যাদি অদ্যাবধি পাওয়া যায়নি। বাসত্মবায়নে হার নগন্য মর্মে প্রতীয়মান হয়। কমিশনের জনবল সমস্যা ও নদী সংশিস্নষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ দক্ষ, কারিগরী জ্ঞান সম্পন্ন কর্মকর্তার পদায়ন না হওয়ায় বিবেচনাধীন বছরে পরিবীড়্গণ কার্যক্রম জোরদার ও যথার্থভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হয়নি।
পরিদর্শনে বর্ণিত সুপারিশ সমূহ বাস্তবায়নের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর সংস্থা হতে প্রাথমিক তথ্যাদি অদ্যাবধি পাওয়া যায়নি। বাস্তবায়নের হার নগন্য মর্মে প্রতীয়মান হয়। কমিশনের জনবল স্বল্পতা ও নদী সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ দক্ষ, কারিগরী জ্ঞান সম্পন্ন কর্মকর্তার পদায়ন না হওয়ায় বিবেচনাধীন বছরে পরিবীক্ষণ কার্যক্রম জোরদার ও যথার্থভাবে সম্পাদন করা সম্ভব হয়নি।